17 views
in ইতিহাস by
ইংরেজ শাসনামল বাংলার প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রেক্ষিত এবং এর তাৎপর্য কী, বিশ্লষণ করুন?

1 Answer

0 like 0 dislike
by
বাংলার কৃষক একসময়ে সূর্য উঠা ভোরে লাঙ্গল কাঁধে ছুটত তার ফসলের জমিতে। ফিরত অস্তগামী সূর্যকে সামনে রেখে। তার ঘরে অন্ন-বস্ত্রের প্রাচুর্য ছিল না, তবে অভাবও ছিল না। অভাব ছিল না আনন্দ- উৎসবের। বারো মাসে তেরো পার্বণ লেগেই থাকত। জারি, সারি, কীর্তন, যাত্রাপালা গানে জমে উঠত গ্রাম- বাংলার সন্ধার আসর। কিন্তু সপ্তম ও অষ্টম শতকে ইংরেজ বণিক শ্রেণির আগ্রাসন কেড়ে নিতে থাকে বাংলার কৃষকের মুখের হাসি, তাদের আনন্দ- উৎসব। প্রথমে তারা ধ্বংস করেছিল গ্রাম- বাংলার কুটির শিল্প, তারপর তাদের নজর পড়ে এদেশের উর্বর জমির উপর। অতিরিক্ত অর্থের লোভে ভূমি রাজস্ব আদায়ে একের পর এক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলতে থাকে। যে পরীক্ষার নিষ্ঠুর বলি হয় বাংলার কৃষক-সাধারণ মানুষ। ফলে তীব্র শোষণের শিকার অসহায় কৃষক-সাধারণ মানুষের বিদ্রোহ করা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। এ বিদ্রোহ ক্রমাগত চলতে থাকে আঠারো শতকের শেষাবধি থেকে উনিশ শতকের শেষার্ধ পর্যন্ত। এর সঙ্গে সঙ্গে বাংলার মুসলমান সমাজে ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে, যেটি পরবর্তী পর্যায়ে ব্যাপক কৃষক আন্দোলনে রূপ নেয়। একই সঙ্গে পাশ্চাত্যের আধুনিক চিন্তার ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে এ সমাজের শিক্ষিত মহলে। ফলে হিন্দু সমাজে যেমন শিল্প, সাহিত্যে নবজাগরণের সূত্রপাত ঘটে, তেমনি উদ্ভব ঘটে মুক্তচিন্তা মুক্তবুদ্ধির। শুরু হয় কুসংস্কার, গোঁড়ামি দূর করে হিন্দু ধর্মের সংস্কার। মুসলমান শিক্ষিত সমাজও সংস্কারের মাধ্যমে মুসলমান সমপ্রদায়কে পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত করে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে এগিয়ে আসেন। মূলত আঠারো ও উনিশ শতকজুড়ে এই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক রাজনীতিতে বইতে থাকে পরিবর্তনের হাওয়া। এই পরিবর্তনের প্রথম সূচনা করে বাংলার কৃষক, সাধারণ মানুষ।

Related questions

20,792 questions

22,887 answers

675 comments

1,447 users

Categories

...