- আপনি এখানে?(রিদিতা) - না মানে এই দিকে একটা কাজে এসেছিলাম। - তাই না?? ঠিক করে যে মিথ্যাটাও বলতে শেখেননি দেখছি। - না মানে ঠিকই তো বলেছি.. - ও তাই..? আপনার অফিস এ দিকে কাজ দিয়েছে তাই না? কথাটি শোনার পরই চুপ হয়ে দাড়িয়ে রইলাম। আসলে আমি ওকে দেখার জন্যই ওর কলেজ ভিকারুন্নেসাতে এসেছি। - চুপ কেনো? - এমনি... - আচ্ছা চলেন ফুসকা খাই... রিদিতা ও তার বান্ধবিরা ফুসকা খাচ্ছে। আর আমি অপলক ওর দিকে তাকিয়ে আছি। রিদিতার মুখের দিকে তাকালে এখনো বাচ্চা বাচ্চা মনে হয়। কেমন পাগলামো টাইপ আচরন... - বিলটা দেন.. ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে হারিয়ে গেছিলাম। টোল পড়া হাসির সাথে কেমন একটা মায়া কাজ করে। ওর দিকে তাকিয়ে থেকে সেটা দেখতে ভালোই লাগছিলো। তাই হারিয়ে গেছিলাম.. - কি ভাবছেন..বিল দেন।। বিলটা দিয়ে চলে আসছিলাম হাটতে হাটতে। পাশে রিদিতাও আছে। কিন্তু দুজনেই নিশ্চুপ। - আমাকে বাসায় পৌছে দিয়ে আসেন। রিদিতার কথা শুনে তার দিকে তাকালাম। মুসকি হাসির সাথে তাকে দেখতে খুব মহোনীয় লাগছিল। - কি হল বাসায় দিয়ে আসবেন না আমাকে? - হুমমম রিকাশাতে করে ওর বাসার সামনে আসলাম। রিদিতা নেমে বললো.. - শুনুন - হুমম - কাল থেকে যেনো আর আমার কলেজের সামনে না দেখি। - আচ্ছা.. তার দিকে একটু তাকিয়ে থেকে চলে আসছিলাম। একটু দুরে যেতেই পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলাম..রিদিতা এখনো গেটের সামনে দাড়িয়ে আমার চলে যাওয়া দেখছে। দুর থেকে তাকানোর ভাব দেখে বুঝলাম,, না গেলে কী হয় না? হুটট করেই নিজেই মুচকি হাসি দিয়ে সোজা চলে আসলাম বাড়িতে। রুমে শুয়ে শুয়ে ভাবছি..রিদিতা হল আমার ভবিষ্যৎ বউ। তাকে আংটিও পরানো আছে। খালি কয়েকটা দিন পরই ওকে বউ করে আনতে বাকি মাত্র। তবে আমি তো রিদিতাকে প্রথম বিয়ে করতে চাই নি। কিন্তু এখন কেনো জানি ওর প্রতি একটা নিরব টান বুকের মধ্যে অনুভব করছি। বিয়ে কেনো করতে চাই না তার জন্য অবশ্যই একটা কারন আছে। তিনমাস আগের কথা.. রুমে বসে সিগারেট খাচ্ছি। এমন সময় মা এসে সিগারেট কেড়ে নিয়ে বলে.. - আর কত নীল? - কেনো কি হয়েছে? - যে চলে গেছে তার জন্য কেনো তুই নিজের জীবনটা শেষ করবি? - মা যাও তো ভালো লাগছে না। - তোকে ছেড়ে হিমি চলে গেছে তাই বলে কি তোর জীবন থেমে থাকবে? নিজের খেয়াল নিতে পারিস না? আর শোন, যে যাওয়ার সে ঠিকই চলে যাবে। শুধু নিজেকে কষ্ট দেয়ার কোনো মানেই হয় না। - মা যাও এখান থেকে। - আর কত কাঁদবো তোর জন্য একটু বলবি আমাকে? হিমির ভালোবাসাটা ভালোবাসা,,আর তোর মায়ের ভালোবাসাটা ভালোবাসা না তাই না?? কথাটি শোনা মাত্রই বুকের ভিতর হুট করেই মোচড় দিয়ে উঠল। মায়ের দিকে তাকালাম,,চোখে তার কত মায়া,,সে মায়াতে তার সন্তানকে আগলে রাখার আপ্রান চেষ্টা তার। আসলেই তো মা ঠিকই বলেছে। যে চলে যাওয়ার থাকে তাকে ভেবে কি লাভ। নিজেকে কষ্ট দেয়া ছাড়া আর কিছুই না মাত্র। আর মায়ের ভালোবাসার থেকে দুনিয়ার কোনো ভালোবাসা তুলনাহীন। মায়ের ভালোবাসাটাই মহান। - কি হল চুপ কেনো? তোকে আমার কসম দিলাম প্লীজ এসব ছাড়...নিজের খেয়াল নে।চলবে... ***অদ্ভদ ভালোবাসা** ১ম পর্ব*** লেখক : Abir Hasan