খতমে তারাবির ইমামতি করে বিনিময় নেওয়া জায়েয কি না? এটা নিয়ে বিস্তর আলোচনা রয়েছে। অনেকে রমজান মাসে তারাবির ইমাম সাহেবকে এক মাসের জন্য নিয়োগ দিয়ে বেতন দেন। তাদের যুক্তি, ফরজ নামাজের ইমামতির বিনিময় যখন জায়েজ তখন খতম তারাবির বিনিময় গ্রহণও জায়েজ। অনেকে আবার তারাবির সঙ্গে সঙ্গে হাফেজ সাহেবকে দু’এক ওয়াক্ত ফরজ নামাজের দায়িত্ব দেন। বলেন, তাকে ওই নামাজের ইমামতির জন্য হাদিয়া দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো, খতম তারাবির বিনিময় দেওয়া-নেওয়া দু’টোই নাজায়েজ। হাদিয়ার নামে দিলেও জায়েজ হবে না। এক মাসের জন্য নিয়োগ দিয়ে বেতন হিসেবে দিলেও জায়েজ নয়, কয়েক ওয়াক্ত নামাজের দায়িত্ব দিয়ে দিলেও জায়েজ নয়। কারণ এক্ষেত্রেও প্রদেয় বেতন খতমের বিনিময় হওয়া স্বীকৃত।
মোটকথা হলো, খতম তারাবির বিনিময় গ্রহণের জন্য হিলা অবলম্বন করলেও তা জায়েজ হবে না। কারণ খতম তারাবি খালেস একটি ইবাদত, যা নামাজ ও রোজার মতো ইবাদতে মাকসুদার অন্তর্ভুক্ত। আর এ ধরনের ইবাদতের বিনিময় দেওয়া-নেওয়া উম্মতে মুসলিমার ঐকমত্যের ভিত্তিতে নাজায়েজ। এতে না কোনো মাজহাবের মতপার্থক্য আছে, না পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ইসলামি স্কলারদের মাঝে কোনো মতভেদ আছে। ইমামতির বেতন ঠিক করা এবং তা আদায় করা যদিও পরবর্তী ইসলামি স্কলারদের দৃষ্টিতে জায়েজ। কিন্তু খতম তারাবির বিনিময়টা ইমামতির জন্য হয় না; বরং তা মূলত খতমের বিনিময়ে হয়ে থাকে। আর তেলাওয়াতের বিনিময় গ্রহণ করা সব ইসলামি স্কলারের নিকট হারাম। অধিকন্তু পরবর্তী ইসলামি স্কলাররা যে ইমামতির বেতন জায়েজ বলেছেন, সেটা হলো ফরজের ইমামতি। সুন্নত জামাতের ইমামতি এর অন্তর্ভুক্ত নয়।